কবীরা গুনাহ কি ?
কবিরা গুনাহের সংজ্ঞা
ইমাম যাহাবী রহ কিতাবুল কাবার এর ভুমিকায় কবীরা গুনাহ বর্ণনা করেছেন যে সকল গুনাহের কারনে দুনিয়াতে শরীয়ত কর্তৃক নির্ধারিত শাস্তি রয়েছে যেমন চুরিকরা ,যেনাকরা অথবা আখিরাতের শাস্তি ধমকি অথবা আল্লাহর গজব বা লানতের কথা বর্ণিত হয়েছে সেগুলোকে কবীরা গুনাহ বলা হয় কবিরা গুনাহ তওবা ছাড়া মাফ হয় না
কাবিরা গুনহা শিরক করাঃ
সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করা অর্থাত কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা বা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
নিশ্চয়ই যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা জাহান্নাম
অন্যায়ভাবে হত্যা করা কবীরা গুনাহঃ
কোন মুসলিমকে জেনে শুনে অন্যায়ভাবে হত্যা করা কবীরা গুনাহ।আল্লাহ তায়ালা বলেন যে ব্যক্তি কোন মুসলিমকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম,যাতে সে সর্বদা থাকবে এবং আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি গজব নাজিল করেন; আর আল্লাহ তার জন্য মহা শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন।
কবীরা গুনাহ যাদুঃ
শরীয়তের যাদু -টোনা সম্পুর্ণ অবৈধ।বিশষত যদি যাদুর মন্তসমুহে শিরকী কথা বার্তা থাকে, তবে সে যাদু কুফরীর নামান্তর। আল্লাহ তায়ালা বলেন, অবশই শয়তানগন মানুষকে যাদু শিক্ষা দিয়ে কুফরীতে লিপ্ত হয়েছিল ।
কবীরা গুনাহ নামাজ পরিহার করাঃ
নামাজ পরিহার করা বা নামাজের সময় নস্ট করে পরে আদায় করা কবীরা গুনাহ আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাদের স্থলাভিষিক্ত হলো এমন লোক যারা নামাজ নস্ট করত এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ করতো, সুতরাং তারা অচিরেই তাদের পথভ্রষ্ট তার সাক্ষাত পাবে।তবে যারা ত ওজন তওবা করেছে ঈমান এনেছে ও সৎকর্ম করেছে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি বিন্দুমাত্র জুলুম করা হবে না।
( সূরা বাকারা ১০২)
ইবনে আব্বাস ( রা.) বলেন, নামাজ পরিহার করার অর্থ পরিপূর্ণ ছেড়ে দেওয়া নয়; নামাজ পরিহার করার অর্থ হলো সময় নস্ট করে পরে আদায় করা পথভ্রষ্ট তার সাক্ষাত পাওয়ার অর্থ তাদের পথভ্রষ্ট তার কারনে তারা কিয়ামতের দিন শাস্তির সম্মুখীন হবে
কবীরা গুনাহ যাকাত প্রদান না করাঃ
যারা সোনা রুপা জমা করে অথচ আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না তাদের জন্য মহা কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে। আবু হুরায়রা( রা. )হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল স বলেছেন যাকে আল্লাহ তায়ালা মাল দান করেছেন, আর সে যাকাত আদায় করেনি। কিয়ামতের দিন তার মালকে এমন একটি বিসধর সাপে পরিনত করা হবে।আর সেই সাপ বলবে আমি সেই মাল আমি তোমা'র সংরক্ষিত অর্থ। কবিরা গুনাহ ওজর ছাড়া রমজানের রোজা না রাখারোজা রোজা ইসলামের পঞ্চম রোকন গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত আল্লাহতালা রোজা কে তার বান্দার জন্য ফরজ করে দিয়েছেন আল্লাহ তায়ালা বলেন হে মুমিনগণ তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে ।যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের প্রতি খরচ করা হয়েছিল যাতে তোমাদের মধ্য তাকওয়া সৃষ্টি হয়।( সূরা বাকারা-১৮৩)রোজা এমন একটি ইবাদত যারা প্রতিদান আল্লাহ তায়ালা নিজ হাতে প্রদান করবেন এবং তা দারা সগীরা গুনাহ সমূহ মাফ করা হয়।
কবিরা গুনাহ পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়াঃ
আল্লাহ তায়ালা বলেন, পিতা-মাতার সঙ্গে তোমরা ভালো ব্যবহার করো (সুর া বানি ইসরাইল) তাদের একজন অথবা উভয় যদি তোমার সম্মুখে বার্ধক্য উপনীত হয় তবে তাদের কে উফ শব্দ বলোনা তাদেরকে ধমক দিও না আর তাদেরউভাইয়ের সাথে ভালো ব্যবহার করো।কবিরা গুনাহ আত্মীয়তা ছিন্ন করা: রাসূল সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এরশাদ করেন ,আতিয়া তা সম্পর্ক ছিন্নকারী কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না। কাবিরা গুনহা যেনা করা আল্লাহতালা বলেন, তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেওনা নিশ্চয়ই তা অশ্লীল ও বিপথগামীতা ( সূরা বানী ইসরাইল)
কাবিরা গুনহা সুদ খাওয়াঃ
সুদ সুদ দেওয়া নেওয়া হারাম সুদ ভক্ষণ কারীদের ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা ও রাসুল সঃ এ র পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তা'আলা বলেন, হে মুমিনগণ আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমরা যদি প্রকৃত মুমিন হয়ে থাকো তবে তোদের যে অংশই পাওয়া সৃষ্ট রয়ে গেছে তা ছেড়ে দাও ।তোমরা যদি তা না করো তবে আল্লাহ তালার পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও। ( সূরা বাকারা২৭৮-২৭৯)
কবিরা গুনহা অন্যায় ভাবে এতিমের মাল অন্যায় ভাবে ভক্ষণ করা:
আল্লাহ তাআলা বলেন নিশ্চয় যারা এতিমের মাল অন্যায় ভাবে ভোগ করে তারা নিজেদের পেটে কেবল আগুন ভর্তি করে তারা অচিরে এর জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে।( সূরা নিসা-১০)
কবিরা গুনহা আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি মিথ্যা আরোপ করাঃ
কোন সন্দেহ নেই যে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের প্রতি মিথ্যা আরোপ করা কুফরি। আল্লাহতালা বলেন, কিয়ামতের দিন তুমি দেখবে যারা আআল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরপ করেছিল তাদের চেহারা কালো হয়ে গেছে। এর ূপ এর ব্যক্তির অহংকারীদের ঠিকানা কি জাহান্নাম নয় । রাসুল সাঃ বলেন, যে ব্যক্তি আমার উপর মিথ্যা আরোপ করে সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নেই।
কবিরা গুনাহ হা অহংকার করাঃ
আল্লাহুতালা অহংকারীদের কখনো পছন্দ করেন না এই কারণে তিনি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করবেন আল্লাহ তা'আলা বলেন নিশ্চয় তিনি অহংকারীদের পছন্দ করেন না। যে ব্যক্তি অহংকার করে সে যেন আমার চাদ র টানাটানি করে।
কবিরা গুনহা মদ পান করাঃ
আল্লাহ তাআলা বলেন ,হে মুমিনগণ নিশ্চয় মদ জুয়া মুক্তি পূজার বেদী এবং ভাগ্য নির্ণায়ক শয়তানি কাজ তোমরা এসব কাজ বর্জন করো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো । ( সূরা মাইদা-৯০)
কবিরা গুনহা চুরি করাঃ
চুরি করা একটা মারাত্মক অপরাধ।যার শাস্তি দুনিয়াতে হাত কেটে দেওয়া হয় । বড়আখেরাতে তাদেরকে মহা শাস্তি দেয়া হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন যে পুরুষ ও নারী চুরি করে তাদের উভয়ে হাত কেটে দাও শাস্তি দেওয়ার জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে হতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি রয়েছে।
কবিরা গুনাহ জুলুম করাঃ
যারা অন্যায় ভাবে কথার মাধ্যমে প্রহারের মাধ্যমে গালির মাধ্যমে অন্য কোনভাবে মানুষের সাথেজুলুম করে ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা বলেন যারা জুলুম করেছে তারা অচিরেই জানতে পারবে কোন পরিণামের দিকে ফিরে যাচ্ছে।
কবিরা গুনাহ হারাম সম্পদ ভোগ করাঃ
তোমরা একে অন্য সম্পদ অন্যায় ভাবে ভোগ করো না। কেননা হারাম ভক্ষণকারী ব্যক্তি কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবেন না।
কবিরা গুনাহ আত্মহত্যা করাঃ
আত্মহত্যা করা একটি জঘন্যত অপরাধ আল্লাহতালা বলেন তোমরা নিজেরা নিজেদের হত্যা করো না, নিশ্চয় নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা পরম দেন
কবিরা গুনাহ খেয়ানত করাঃ
আল্লাহ তাআলা বলেন হে মুমিনগণ আল্লাহ ও রাসূলের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করো না এবং জেনে শুনে নিজেদের আমানতর খেয়ানত করোনা। আল্লাহ বলেন এমন বলেন হে মুমিনগণ খোটা ও কষ্ট দিয়ে নিজেদের সাদকাকে খেয়ানত করো না। আল্লাহ তাআলা মানুষকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন তাই প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত সকল পাপ থেকে বেঁচে থাকা।
টুডে ডিজি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url